হজ্জের রুকন, ওয়াজিব ও সুন্নত
 
হজ্জের রুকন, ওয়াজিব ও সুন্নত
   

আলহামদুলিল্লাহ।

হজ্জের রুকন ৪টি, ওয়াজিব ৭টি এবং রুকন ও ওয়াজিব ছাড়া বাকী আমলগুলো সুন্নত। বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপ:

 

বুহুতি (রহঃ) ‘আর-রওদুল মুরবি’ গ্রন্থে (১/২৮৫) বলেন, হজ্জের রুকন ৪টি:

১।  ইহরাম করা; ইহরাম হচ্ছে- হজ্জের কার্যাবলী শুরু করার নিয়ত করা। দলিল হচ্ছে- “সকল আমল নিয়্যত অনুযায়ী হয়ে থাকে।”[আল-হাদিস]

২।  আরাফাতে অবস্থান করা; দলিল হচ্ছে- “হজ্জ মানে- আরাফা”[আল-হাদিস]

৩।  তাওয়াফে যিয়ারা (এটাকে তওয়াফে ইফাযাও বলা হয়) আদায় করা; দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী: “এবং তাওয়াফ করে প্রাচীন গৃহের”[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ২৯]

৪।  সায়ী করা; দলিল হচ্ছে- “তোমরা সায়ী কর, কেননা নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর সায়ী করা ফরয করে দিয়েছেন”[মুসনাদে আহমাদ]

 

হজ্জের ওয়াজিব ৭টি:

১।   যার যার মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা। অর্থাৎ মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা ওয়াজিব; আর ইহরাম বাঁধা হচ্ছে- রুকন।

২।  যে ব্যক্তি দিনের বেলায় আরাফার ময়দানে অবস্থান নিয়েছে তার জন্য সূর্য ডোবা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করা।

৩।  যাদের যমযম পানি পান করানো কিংবা হাদির পশু চরানোর দায়িত্ব নেই তাদের জন্য তাশরিকের দিনগুলোতে মীনার ময়দানে রাত্রি যাপন করা।

৪।  যারা মধ্যরাতের পূর্বে মুযদালিফাতে পৌঁছেছেন তাদের জন্য মধ্যরাতের পর পর্যন্ত মুযদালিফাতে রাত্রিযাপন করা; যমযম পানি পান করানো ও হাদির পশু চরানোর দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা ছাড়া।[কোন কোন আলেম মুযদালিফাতে রাত্রি যাপন করাকে হজ্জের রুকন গণ্য করেন; যা ছাড়া হজ্জ শুদ্ধ হবে না। ইবনুল কাইয়্যেম তাঁর ‘যাদুল মাআ’দ’ গ্রন্থে (২/২৩৩) এ মতটির প্রতি ঝুঁকেছেন]

৫।  ক্রমধারা রক্ষা করে জমরাতগুলোতে কংকর নিক্ষেপ করা।

৬।  মাথা ন্যাড়া করা কিংবা মাথার চুল ছোট করা।

৭।   বিদায়ী তাওয়াফ করা।

[আর তামাত্তু কিংবা কিরান হজ্জপালনকারী হলে তার উপর হাদি (ছাগল জবাই করা) ওয়াজিব। দলিল হচ্ছে- আল্লাহ তাআলার বাণী: “তোমাদের মধ্যে যে কেউ উমরাকে হজ্জের সঙ্গে মিলিয়ে লাভবান হতে চায় সে সহজলভ্য হাদি জবাই করবে। কিন্তু যদি কেউ তা না পায়, তবে তাকে হজ্জের সময় তিনদিন এবং ঘরে ফেরার পর সাতদিন এ পূর্ণ দশদিন রোযা পালন করতে হবে। এটা তাদের জন্য, যাদের পরিজনবর্গ মসজিদুল হারামের বাসিন্দা নয়।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৯৬]

 

হজ্জের অবশিষ্ট কার্যাবলী ও কথামালা হচ্ছে- সুন্নত:

যেমন, তাওয়াফে কুদুম, আরাফার রাত্রিতে মীনাতে রাত্রিযাপন করা, যথাযথসময়ে ইযতিবা ও রমল করা, হাজারে আসওয়াদকে চুমু খাওয়া, দোয়া ও যিকির পড়া, সাফা-মারমওয়া পাহাড়ে আরোহন করা।

 

উমরার রুকন তিনটি:

১। ইহরাম বাঁধা     ২।  তাওয়াফ করা     ৩। সায়ী করা

 

উমরার ওয়াজিব :

 মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করা,         মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা।[সমাপ্ত]

 

রুকন, ওয়াজিব ও সুন্নতের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে- রুকন পালন করা ব্যতীত হজ্জ সহিহ হবে না। ওয়াজিব বাদ পড়লেও হজ্জ সহিহ হবে; তবে জমহুর আলেমের মতানুযায়ী দম (ছাগল জবাই) দিতে হবে। আর সুন্নত বাদ পড়লে কোন কিছু করতে হয় না।

[উল্লেখিত রুকন, ওয়াজিব ও সুন্নতসমূহের দলিল ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী জানার জন্য দেখুন ‘আস-শারহুল মুমতি’ (৭/৩৮০-৪১০)]

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব