হজ্জ ও উমরাহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ

হজ্জ ও উমরাহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ:

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য যিনি এই নিখিল বিশ্বের মালিক। দরূদ ও সালাম শেষনবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর বংশধর এবং সাহাবীগণের প্রতি।

নিশ্চয়ই হজ্জ অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। কেননা, তা ইসলামের ৫ম স্তম্ভ বা ভিত্তি। যা দিয়ে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে পাঠিয়েছেন। যা ব্যতীত কারো ঈমান ও দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয় না।

ইবাদত কবুল হওয়ার দু’টি শর্তঃ

  1. ইখলাস অর্থাৎ সকল কাজ একমাত্র আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে করা; যাতে লোক দেখানো, প্রশংসা অর্জন, অথবা দুনিয়া পাওয়ার লোভ লেশ মাত্রও থাকবে না।
  2. কথা এবং কাজ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রদর্শিত পথের অনুসারে হতে হবে। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করতে হলে হাদীসের জ্ঞান থাকা আবশ্যক।

হজ্জের প্রকারভেদ

হজ্জ তিন প্রকারঃ (১) তামাত্তু’ (২) ইফরাদ (৩) ক্বিরান।

হজ্জে তামাত্তুঃ হজ্জ মৌসুমে শুধু উমরাহের ইহরাম বেঁধে তাওয়াফ এবং সা‘ঈ করে (ছাফা মারওয়ার দৌড়কে সা‘ঈ বলে) মাথার চুল মুণ্ডন অথবা খাটো করে হালাল হয়ে যাবে। পরে ৮ই জিলহজ্জ শুধু হজ্জের জন্যে ইহরাম বেঁধে হজ্জের সকল কাজ সমাধা করবে।

হজ্জে ইফরাদঃ শুধু হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধবে এবং মক্কায় পৌঁছে তাওয়াফে কুদূম বা আগমনী তাওয়াফ ও হজ্জের সা‘ঈ করে নিবে। কিন্তু হজ্জে ইফরাদকারী ১০ই জিলহজ্জ ঈদের দিন জামরায়ে আকাবায় পাথর মারা পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকবে। পাথর মেরে হালাল হবে। যদি কেহ সা‘ঈকে হজ্জের তাওয়াফের পরে নিয়ে যায় তাহলে কোনো ক্ষতি নেই।

হজ্জে ক্বিরানঃ উমরাহ্ ও হজ্জের জন্য একসাথে ইহরাম বাঁধবে অথবা প্রথমে উমরাহের জন্য ইহরাম বাঁধবে পরে তাওয়াফ শুরূ করার পূর্বেই হজ্জকে শামিল করে নিবে। ইফরাদকারীর যে কাজ তারও একই কাজ তবে ক্বিরানকারীকে কোরবানী করতে হবে। আর ইফরাদকারীকে কোরবানী করতে হবে না।

উপরোল্লেখিত তিন প্রকারের মধ্যে তামাত্তু হল সবচেয়ে উত্তম। কেননা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদেরকে তামাত্তু করার আদেশ করেছিলেন। এমনকি কেউ যদি তাওয়াফ ও সা‘ঈ করে ফেলে তবুও সে তামাত্তু করতে পারে। কেননা, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সা‘ঈ করার পর সাহাবীদেরকে তামাত্তু করার হুকুম দিলেন এবং বললেন যে যাদের সাথে কোরবানীর জন্তু নেই তারা যেন তামাত্তু করে। তিনি আরও বললেন যে, যদি আমার সাথে কোরবানীর জন্তু না থাকত তাহলে আমিও তাই করতাম যা করতে তোমাদের বলেছি।


উমরাহের বিবরণঃ

উমরাহকারী প্রথমে গোসল করবে, সুগন্ধি আতর দাড়ী ও মাথায় লাগাবে। ইহরামের কাপড় পরিধানের পর যদিও আতরের চিহ্ন বাকী তাকে তাহলেও কোনো ক্ষতি নেই। সকল নারী-পুরুষ এমনকি ঋতুবতী ও নেফাসওয়ালী মেয়েলোকের জন্যও সুন্নত। গোসলের পর ঋতুবতী ও নেফাসওয়ালী মহিলা ছাড়া সকলেই ফরয সালাতের সময় হলে ফরয সালাত আর না হয় দু’রাকাত সুন্নত সালাত তাহিয়্যাতুল ওজুর নিয়তে পড়বে। সালাত শেষে ইহরাম পরিধান করবে এবং তালবিয়া পাঠ করবে। আর তালবিয়া হলঃ

«لبيك عمرة لبيك اللهم لبيك لبيك لا شريك لك لبيك إن الحمد والنعمة لك والملك لا شريك لك»

উচ্চারণঃ লাব্বাইক উমরাতান। লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাববাইকা, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইকা, ইন্নাল হামদা ওয়ান্নি‘মাতা লাকা ওয়াল মুলকা লা-শারিকা লাকা।

অর্থঃ ‘‘উমরাহ আদায়ের জন্যে আমি তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছি, আমি তোমার দরবারে হাজির, হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে হাজির, তোমার দরবারে হাজির, তোমার কোনো অংশীদার নেই। আমি তোমার দরবারে হাজির। নিশ্চয় সমস্ত প্রশংসা, সমস্ত নিয়ামত এবং রাজত্ব তোমারই, তোমার কোনো অংশীদার নেই।’’

পুরুষেরা উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করবে। আর মহিলারা এমনভাবে পাঠ করবে যেন তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তি শুনতে পায়। ইহরাম বাঁধার পর বেশী বেশী করে তালবিয়া পাঠ করবে। বিশেষ করে উঁচু স্থানে উঠতে বা নিচে নামতে, রাত অথবা দিনের আগমনে বেশী বেশী করে তালবিয়া পাঠ করবে এবং আল্লাহর কাছে তাঁর সন্তুষ্টি লাভ ও জান্নাতের জন্য মোনাজাত করবে। জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ইহরাম বাঁধা থেকে নিয়ে তাওয়াফ শুরু করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করবে। তবে হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধা থেকে নিয়ে ঈদের দিন জামরাতুল আকাবায় পাথর মারা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করবে। যখন হারামে প্রবেশ করবে তখন ডান পা প্রথমে রাখবে এবং এ দো‘আ পড়বেঃ

«بسم الله والصلاة والسلام على رسول الله، اللهم اغفرلي ذنوبي وافتح لي أبواب رحمتك، أعوذ بالله العظيم وبوجهه الكريم وبسلطانه القديم من الشيطان الرجيم»

উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহ আল্লাহুম্মাগফিরলী যুনূবী ওয়াফ্তাহলী আবওয়া-বা রাহমাতিকা, আঊযুবিল্লাহিল্ আযীমি ওয়া বিওয়াজহিহিল্ কারীমি ওয়া বিসুলতানিহিল কাদীমি মিনাশ শাইতানির রাজীম।

অর্থঃ ‘‘আল্লাহর নামে। সালাত ও সালম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের উপর। হে আল্লাহ! তুমি আমার গুনাহ্সমূহ মাফ করো। এবং তোমার রহমতের দরজাগুলো আমার জন্য খুলে দাও। আমি মহান আল্লাহর নিকট তাঁর মহিয়ান সত্তা ও সনাতন রাজত্বের ওসিলায় বিতাড়িত শয়তানের অনিষ্ট হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’’

এরপর তাওয়াফ শুরু করার জন্য হাজরে আসওয়াদের নিকট গিয়ে ডান হাত দিয়ে হাজরে আসওয়াদকে স্পর্শ করতঃ চুম্বন করবে। আর যদি সম্ভব না হয় তাহলে হাত দিয়ে ইশারা করবে, চুম্বন করবে না। কারণ চুমু দিতে গিয়ে অন্যকে কষ্ট দেয়া যাবে না। চুমু অথবা ইশারা করার সময় এ দো‘আ পড়বেঃ

«بسم الله والله أكبر اللهم إيمانا بك وتصديقا بكتابك ووفاء بعهدك وإتّباعا لسنّة نبيّك محمد صلى الله عليه وسلم»

উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি ওয়া আল্লাহু আকবার, আল্লা-হুম্মা ঈমা-নামবিকা ওয়া তাসদীক্বাম বিকিতা-বিকা ওয়া ওয়াফা-আন বি আহদিকা ওয়া ইত্তিবা-আন লিসুন্নাতি নাবিইয়্যিকা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’’।

অর্থঃ ‘‘আল্লাহর নামে, আল্লাহ মহান, হে আল্লাহ ! তোমার উপর ঈমান রেখে, তোমার কিতাবকে (কুরআন) সত্যায়ন করে, তোমার প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করে এবং তোমার নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদর্শের অনুসরণ করে (তাওয়াফ আদায় করছি)।’’

এবং তাওয়াফ শুরু করবে। অতঃপর রুকনে ইয়ামানিতে আসলে হাত দ্বারা স্পর্শ করবে, চুম্বন করবে না আর রুকনে ইয়ামানী ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যস্থলে এ দো‘আ পড়বেঃ

﴿رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِي ٱلدُّنۡيَا حَسَنَةٗ وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِ حَسَنَةٗ وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ٢٠١ ﴾ [البقرة: ٢٠١]

«اللهم إنّي أسئلك العفو والعافية في الدنيا والآخرة»

উচ্চারণঃ রাববানা- আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতান ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতান ওয়া ক্বিনা আযাবান্নার।

আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াত ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাহ।’’

অর্থঃ ‘‘হে আমাদের রব, তুমি আমাদেরকে দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণ দান করো এবং জাহান্নামের আযাব হতে মুক্তি দান করো।

হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণ ও নিরাপত্তা ভিক্ষা চাই।’’

যখনই হাজরে আসওয়াদের কাছে আসবে তখনি হাত দ্বারা ইশারা অথবা চুমু দিয়ে তাকবীর বলবে। আর বাকী তাওয়াফে নিজ ইচ্ছানুযায়ী যিকর, তিলাওয়াত ও দো‘আ করতে থাকবে। কেননা, কা‘বা ঘরের তাওয়াফ, ছাফা-মারওয়ার সা‘ঈ এবং জামারায় পাথর নিক্ষেপে আল্লাহ তা‘আলার যিকরই উদ্দেশ্য। আর এ তাওয়াফ অর্থাৎ আগমনী তাওয়াফে পুরুষের জন্য দু’টি কাজ করতে হবে।

  1. ইদ্বতিবা, অর্থাৎ তাওয়াফকারী গায়ের চাদরের মধ্যভাগ ডান কাঁধের নিচে রেখে উভয় কিনারা বাম কাঁধের উপর রাখবে। তাওয়াফ শেষ হওয়ার পর পূর্বের মত চাদর গায়ে দিবে। কেননা ইদ্বতিবা শুধু তাওয়াফেই করতে হয়।
  2. তাওয়াফের প্রথম তিন চক্রে রমল অর্থাৎ ছোট ছোট কদমে কিছুটা দ্রুতগতিতে চলবে এবং বাকী চার চক্রে স্বাভাবিক গতিতে চলবে। যখন তাওয়াফ শেষ হয়ে যাবে তখন এ আয়াতটি পড়বেঃ

﴿وَٱتَّخِذُواْ مِن مَّقَامِ إِبۡرَٰهِ‍ۧمَ مُصَلّٗىۖ ﴾ [البقرة: ١٢٥]

উচ্চারণঃ (ওয়াত্তাখিযু মিম মাক্বা-মি ইবরাহীমা মোসাল্লা)

অর্থাৎ ‘‘এবং তোমরা মাক্বামে ইবরাহীমকে নামাযের স্থান বানাও’’

এবং সূরা ফাতিহার পর প্রথম রাকা‘আতে সূরায়ে কাফিরূন এবং দ্বিতীয় রাকাআতে সূরাতুল ইখলাছ পাঠ করে দু’রাকাআত সালাত মাক্বামে ইবরাহীমের পিছনে পড়বে। সালাত শেষে সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদে গিয়ে স্পর্শ করবে। এরপর ছাফা পাহাড়ের দিকে যাবে। যখন ছাফার নিকটবর্তী হবে তখন এ আয়াতটি পাঠ করবেঃ

﴿ ۞إِنَّ ٱلصَّفَا وَٱلۡمَرۡوَةَ مِن شَعَآئِرِ ٱللَّهِۖ﴾ [البقرة: ١٥٨]

উচ্চারণঃ ইন্নাচ্ছাফা- ওয়াল মারওয়াতা মিন শা‘আ-ইরিল্লা-হ

অর্থঃ ‘‘নিশ্চয়ই সাফা এবং মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভুক্ত।’’

তারপর সাফা পাহাড়ে উঠে কা‘বার দিকে মুখ করে আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা ও গুণগান বর্ণনা করে নিজ ইচ্ছা মত দো‘আ করবে। এ স্থলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্নলিখিত দো‘আ করতেনঃ

«لا إله إلا الله وحمه لا شريك له ، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير – لا إله إلا الله وحده انجز وعده ونصر عبده وهزم الأحزاب وحده»

উচ্চারণঃ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা- শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আলা-কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীর। লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু আনজাযা ওয়া‘দাহু ওয়া নাছারা আবদাহূ ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহূ।

অর্থঃ ‘‘আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো মা‘বুদ নেই। তিনি একা। তাঁর কোনো শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং তাঁরই জন্যে সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো মা‘বুদ নেই। তিনি একা। তিনি তাঁর প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং সবক’টি দলকে একাই পরাজিত করেছেন।’’

এই দো‘আটি তিনবার পড়বে। এবং এর সাথে অন্যান্য দো‘আও করবে। এরপর সাফা থেকে নেমে মারওয়ার দিকে চলবে। যখন সবুজ চিহ্নে পৌঁছাবে তখন যথাসম্ভব দ্রুত গতিতে চলবে। আর যখন দ্বিতীয় সবুজ চিহ্নে পৌঁছাবে তখন স্বাভাবিক গতিতে চলে মারওয়ায় যাবে। মারওয়ায় পৌঁছে কিবলার দিকে মুখ করে দু’হাত উঠিয়ে ছাফায় যেভাবে দো‘আ করেছিলে তেমনি দো‘আ করবে। তারপর মারওয়া থেকে ছাফা’র দিকে যাবে এবং যেখাবে দ্রুত গতিতে প্রথমে চলেছিল সেখানে দ্রুত গতিতে চলবে আর যেখানে স্বাভাবিক গতিতে চলেছিল সেখানে স্বাভাবিক গতিতে চলবে। যখন ছাফায় পৌঁছাবে তখন আগের মতো দো‘আ ইত্যাদি করবে, এভাবে মারওয়ায়ও করবে। ছাফা থেকে মারওয়ায় যাওয়া এক চক্র এবং মারওয়া থেকে ছাফায় আসা আরেক চক্র। এভাবে সাত চক্র পূর্ণ করবে। আর সা‘ঈতে নিজ ইচ্ছানুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত, যিকর ও দো‘আ করতে থাকবে। সা‘ঈ শেষে পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ মাথার চুল মুণ্ডন অথবা খাটো করতে হবে। আর মহিলাদের জন্য আঙ্গুলির অগ্রভাগ পরিমাণ চুল কাটতে হবে। পুরুষের জন্য মাথার চুল মুণ্ডন করাই উত্তম। হ্যাঁ যদি হজ্জের সময় অতি নিকটবর্তী হয় তাহলে চুল ছোট করাই উত্তম, যাতে হজ্জের সময় চুল মুণ্ডন করা যায়। এরই সাথে উমরাহ সম্পন্ন হয়ে গেল। আর ইহরামের কারণে যে সমস্ত কাজ হারাম ছিল, যেমন পোষাক, সুগন্ধি ব্যবহার, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি সবকিছুই হালাল হয়ে গেল।


হজ্জের বিবরণঃ

৮ই যিলহজ্জ তারওয়িয়ার দিন প্রথম প্রহরে ঐ স্থানে ইহরাম বাঁধবে যেখানে থেকে হজ্জ করার ইচ্ছা করবে। উমরাহের ইহরাম বাঁধতে যেভাবে গোসল, সুগন্ধি ব্যবহার ও সালাত আদায় করেছিল; তেমনি হজ্জের ইহরাম বাঁধার সময়ও করবে। এরপর হজ্জের ইহরামের নিয়ত করবে এবং এভাবে তালবিয়া পাঠ করবেঃ

«لبيك حجا لبيك اللهم لبيك لا شريك لك لبيك إن الحمد والنعمة لك والملك لا شريك لك»

উচ্চারণঃ লাব্বাইকা হাজ্জান লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইকা ইন্নাল হামদা ওয়ান্নি‘মাতা লাকা ওয়াল মুলকা লা-শারীকা লাকা।

অর্থঃ ‘‘আমি তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে হজ্জ আদায়ের জন্যে হাজির হয়েছি। আমি তোমার দরবারে হাজির, আমি তোমার দরবারে হাজির, তোমার কোনো শরীক নেই। আমি তোমার দরবারে হাজির। নিশ্চয়ই সমস্ত নিয়ামত এবং রাজত্ব তোমারই। তোমার কোনো শরীক নেই।’’

আর যদি হজ্জ সম্পাদন করতে কোনো বাধার আশংকা থাকে তাহলে শর্ত সাপেক্ষে নিয়ত করবে এবং বলবেঃ

«وإن حبسني حابس فمحلي حيث حبستني»

অর্থাৎ যদি কোনো বাধাদায়ক বস্তু আমাকে হজ্জ সম্পাদক করতে বাধা দেয়, তাহলে হে আল্লাহ! তুমি যেখানে আমাকে আটকিয়ে দিবে সেখানেই আমার হালাল হওয়ার স্থান হবে।

কিন্তু যদি হজ্জ সম্পাদন করতে কোনো বাধার আশংকা না থাকে তাহলে শর্তের নিয়ত করবে না বরং শর্ত ছাড়াই নিয়ত করবে। অতঃপর মিনার দিকে রওয়ানা দিবে। মিনায় পৌঁছে যোহর, আসর, মাগরিব, এশা এবং ফজর এই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত নির্ধাতির সময়ে কছর করে পড়বে। জমা বা দুই ওয়াক্তের সালাত একত্রে পড়বে না। আরাফার দিন সূর্য উঠার পর মিনা থেকে আরাফার দিকে রওয়ানা দিবে। এবং সম্ভব হলে নামিরা নামক স্থানে অবস্থান করবে। আর তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে কোনো ক্ষতি নেই। কেননা, নামিরায় অবস্থান করা সুন্নত। যখন সূর্য ঢলে যাবে, তখন যোহর ও আসরের সালাত একসাথে প্রথম ওয়াক্কতে দু-দু রাকাআত করে পড়বে। যেমনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  করেছিলেন। সালাতের পর মহান ও মহীয়ান আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি, যিকর ও দো‘আয় সময়কে নিযুক্ত করবে। আর নিজ পছন্দানুযায়ী দু’হাত উঁচু করে কিবলামূখী হয়ে দো‘আ করবে। যদি জাবালে রাহমাত পিছনে পড়ে যায় তাহলে কোনো অসুবিধা নেই। কেননা, কিবলামূখী হওয়া সুন্নত, আর জাবালের দিকে মুখ করা সুন্নত নয়। এই মহান অবস্থান স্থলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশী বেশী করে এই দো‘আ পাঠ করতেনঃ

«لا إله إلا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيئ قدير»

উচ্চারণঃ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা-কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীর।

অর্থঃ ‘‘একমাত্র আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো মা‘বুদ নেই। তাঁর কোনো শরীক নেই। রাজত্ব তারই এবং তাঁরই জন্য সমস্ত প্রশংসা। এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।’’

যদি কোনো ক্লান্তি অনুভূত হয় আর এই ক্লান্তি দূর করতে সাথীদের সাথে লাভজনক কথাবার্তা অথবা কল্যাণকর কিতাবাদি, বিশেষ করে যে সমস্ত কিতাব আল্লাহ তা‘আলার দয়া ও দান সম্পর্কে লিখিত ঐ সমস্ত কিতাব পাঠ করতে ইচ্ছা হয় তাহলে তা হবে উত্তম। অতঃপর বিনয়ের সাথে আল্লাহর দিকে রূজু হয়ে দো‘আ করবে। এবং দিনের শেষ ভাগটা দো‘আর মাধ্যমে কাটাবার সুযোগ গ্রহণ করবে। কেননা, আরাফার দো‘আ হল সর্বশ্রেষ্ঠ দো‘আ।

সূর্য অস্ত যাওয়ার পর মুজদালিফার দিকে যাত্রা করবে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার সালাত একত্রে করে পড়বে। হ্যাঁ যদি মুজদালিফায় এশার সময়ের পূর্বেই পৌঁছে যায় তাহলে মাগরিবের সালাত মাগরিবের সময় পড়ে নিবে এবং পরে এশার সালাত তার নির্ধারিত সময়ে পড়বে। তবে যদি ক্লান্তি বা পানির স্বল্পতার দরুন জমা বা একত্র করতেই হয় তাহলে কোনো অসুবিধা নেই, যদিও এশার সময় না হয়। আর যদি আশংকা হয় যে, অর্ধরাতের পূর্বে মুযদালিফায় পৌঁছাতে পারবে না তাহলে মুযদালিফায় পৌঁছার পূর্বে হলেও সালাত পড়ে নিবে, কেননা অর্ধরাত পর পর্যন্ত সালাত পিছিয়ে নেওয়া জায়েয নয়। আর মুযদালিফায় রাত্রিযাপন করবে এবং ফজরের সময় হওয়ার পরপরই আজান ও ইক্বামত দ্বারা সালাত আদায় করবে। অতঃপর মাশ‘আরে হারামে গিয়ে আল্লাহ তা‘আলার একত্ববাদ ও বড়ত্ব বর্ণনা করবে এবং সম্পূর্ণ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত দো‘আয় মগ্ন থাকবে। যদি মাশ‘আরে হারামে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে নিজ অবস্থান স্থলে থেকেই ক্বিবলামূখী হয়ে দু’হাত উঠিয়ে দো‘আ করবে। যখন পূর্ণ ফর্সা হয়ে যাবে তখন সূর্য উঠার পূর্বেই মিনার দিকে রওয়ানা দিবে এবং মুহাসসির নামক উপত্যাকায় আসলে দ্রুতগতিতে চলবে। মিনায় পৌঁছার পর নিকটবর্তী পরপর সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবে। কংকরগুলি বুটের দানা পরিমাণ হতে হবে। প্রতিটি কংকর নিক্ষেপের সময় ‘‘আল্লাহু আকবার’’ বলবে। কংকর নিক্ষেপের পর কোরবাণীর পশু যবেহ করবে। তারপর পুরুষেরা মাথা মুণ্ডন করবে। আর মহিলারা আঙ্গুলির অগ্রভাগ পরিমাণ চুল ছোট করবে। এরপর মক্কায় গিয়ে হজ্জের তাওয়াফ ও সা‘ঈ করবে। কংকার নিক্ষেপ ও মাথা মুণ্ডনের পর যখন তাওয়াফ করার জন্য মক্কায় যাওয়ার মনস্থ করবে, তখন সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নত। তাওয়াফ ও সা‘ঈ শেষে মিনায় ফিরে এসে ১১ ও ১২ তারিখের রাত্রি যাপন করবে এবং দিনে সূর্য ঢলার পর তিনটি জামরায় পর পর সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবে। এই জামরাটি মক্কা থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী মসজিদে খায়ফের নিকট অবস্থিত। প্রতিটি কংকর নিক্ষেপের সময় আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করবে। কংকর নিক্ষেপ শেষে সামান্য এগিয়ে নিজ পছন্দ মোতাবেক দীর্ঘক্ষণ ধরে দো‘আ করবে। যদি দো‘আর জন্য সময় কাটানো অসম্ভব হয় তাহলে সংক্ষেপে দো‘আ করে নিবে, যাতে সুন্নতের উপর আমল হয়ে যায়। তারপর মধ্যবর্তী জামরায় পরপর সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবে। কংকর নিক্ষেপের পর বাম দিকে সামান্য এগিয়ে কিবলামূখী হয়ে দু’হাত উঁচু করে সম্ভব হলে সম্ভব হরে দীর্ঘক্ষণ ধরে দো‘আ করবে। আর না হয় সম্ভব পরিমাণ দাঁড়িয়ে দো‘আ করে নিবে। তারপর জামরায়ে আকাবায় পরপর সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবে। প্রতিটি কংকর নিক্ষেপের সময় আল্লাহু আকবার বলবে। এই জামরায় কংকর নিক্ষেপের পর দো‘আর জন্য না থেকেই চলে যাবে। এভাবে ১২ তারিখে কংকর নিক্ষেপ করার পর যদি প্রত্যাবর্তন করতে ইচ্ছা হয়, তাহলে মিনা থেকে বের হয়ে যাবে। আর যদি ইচ্ছা হয়, তাহলে মিনায় ১৩ তারিখের রাত্রি যাপন করবে, এবং দিনে উপরোল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী তিনটি জামরায় কংকর নিক্ষেপ করবে। ১২ তারিখ সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে মিনা থেকে বের না হয়, তাহলে আরেক দিন অবস্থান করে ১৩ তারিখ সূর্য ঢলার পর তিনটি জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব। যখন স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করার ইচ্ছা করবে, তখন তাওয়াফে বিদা বা বিদায়ী তাওয়াফ না করা পর্যন্ত প্রত্যাবর্তন করবে না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যেন তার সফরের শেষ আল্লাহর ঘরের সঙ্গে না করে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে না। তবে ঋতুবতী ও নেফাসওয়ালী মহিলাদের উপর বিদায়ী তাওয়াফ নেই। আর তাদের পক্ষে বিদায়ের জন্য মসজিদে হারামের গেইটের পাশে অবস্থান করা উচিত নয়। নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলি হজ্জ ও উমরাহ্ আদায়কারীর উপর ওয়াজিবঃ

  1. আল্লাহ তা‘আলা যে সমস্ত বিষয় ওয়াজিব করে দিয়েছেন তা পুংখানুপুংখরূপে সম্পাদন করা। সঠিক সময়ে জামাতের সাথে সালাত আদায় করা।
  2. নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা। যেমন, স্ত্রী সম্ভোগ, বেহুদা ও বিবাদ বিসংবাদমূলক কাজ ও কথা-বার্তা ইত্যাদি।
  3. কথা ও কাজে কোনো মুসলমানকে কষ্ট না দেওয়া।
  4. ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কার্যাদি থেকে দূরে থাকা।

এগুলো নিম্নরূপঃ

ক. চুল বা নখ না কাটা। তবে কাঁটা বিধলে তা খুলতে কোনো অসুবিধা নেই, যদিও রক্ত বের হয়ে যায়।

খ. শরীর, কাপড়, পানীয় বস্ত্ত অথবা খাদ্য দ্রব্যে সুগন্ধি ব্যবহার না করা। অনুরূপ সুগন্ধিযুক্ত সাবানও ব্যবহার করবে না। কিন্তু যদি ইহরামের পূর্বেকার ব্যবহৃত সুগন্ধি (শরীরে) থেকে যায়, তাতে কোনো দোষ নেই।

গ. কোনো হালাল স্থলচর জন্তু শিকার না করা।

ঘ. উত্তেজনাসহ স্ত্রীর গা স্পর্শ করবে না অথবা চুমু দিবে না। আর স্ত্রী-সহবাস এর চেয়েও দোষণীয়।

ঙ. নিজের জন্য কিংবা অপরের জন্য বিবাহের প্রস্তাব দিবে না, এবং আকদও করবে না।

চ. হাত মোজা ব্যবহার করবে না। তবে ছেঁড়া কাপড় দিয়ে তা বাঁধলে কোনো অসুবিধা নেই।

নিম্নে বর্ণিত বিষয়াদি বিশেষভাবে পুরুষের জন্য নিষিদ্ধঃ

ক. এমন কিছু দিয়ে মাথা ঢাকবে না, যা মাথায় লেগে যায়। তবে ছাতা ব্যবহার করা, গাড়ী ও তাঁবুতে অবস্থান করা, অথবা মাথায় বোঝা চাপানো দোষণীয় নয়।

খ. জামা, কাপড়, বুরনুস (এক প্রকার টুপি সংযুক্ত জামা), পায়জামা এবং মোজা ব্যবহার করবে না। তবে যদি লুঙ্গি না পায় তাহরে পাজামা ব্যবহার করতে পারবে। এমনিভাবে যদি জুতা না পায় তাহরে মোজা ব্যবহার করতে পারবে।

গ. উপরোল্লেখিত পরিধেয় বস্তুর সাথে যা সামঞ্জস্য রাখে তাও ব্যবহার করতে পারবে না। যেমন ‘আবা (এক প্রকার জামা), টুপি, গেঞ্জি ইত্যাদি। তবে জুতা, আংটি, চশমা, শোনার জন্য কানের মেশিন, হাতঘড়ি ব্যবহার এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও টাকা পয়সা রাখার জন্য কোমরবন্দ ও পেটি ব্যবহার করা জায়েয আছে। অনুরূপ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য এমন কিছুর ব্যবহার যাতে সুগন্ধি নেই তাও জায়েয আছে। মাথা ও শরীর ধোয়া জায়েয আছে। অনুরূপ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য এমন কিছুর ব্যবহার যাতে সুগন্ধি নেই জায়েয আছে। মাথা ও শরীর ধোয়া জায়েয আছে, এমতাবস্থায় যদি অনিচ্ছাবশতঃ চুল পড়ে যায় তাহলে কোনো ক্ষতি নেই। আর মহিলারা মুখাচ্ছাদন অথবা বোরকা পরিধান করবে না। ইহরাম অবস্থায় মহিলাদের জন্য মুখ খুলে রাখা সুন্নত। তবে পর পুরুষের সামনে মুখ ঢেকে রাখা ওয়াজিব। এখানে উল্লেখ্য যে, অমুহরিম অবস্থাতেও নারীদের জন্য পর পুরুষের সামনে মুখ ঢেকে রাখা ওয়াজিব।


মসজিদে নববীর যিয়ারতঃ

  1. হাজীর আগ্রহ হলে হজ্জের আগে অথবা পরে মসজিদে নববীর যিয়ারত এবং সেখানে সালাত পড়ার উদ্দেশ্যে মদীনার দিকে রওয়ানা দিবে। কেননা মসজিদে নববীতে সালাত পড়া মসজিদে হারাম ব্যতীত অন্য যে কোনো মসজিদে হাজার সালাত পড়া অপেক্ষা উত্তম।
  2. মসজিদে নববীতে পৌঁছে তাহিয়্যাতুল মসজিদ দু’ রাকাআত সালাত অথবা ইকামত হয়ে গেলে ফরয সালাত আদায় করবে।
  3. অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের দিকে অগ্রসর হবে এবং কবরের সামনে দাঁড়িয়ে এভাবে সালাম পাঠ করবেঃ

«السلام عليك أيّها النبي ورحمة الله وبركاته صلى الله عليك وجزاك عن أمتك خيرا»

  1. তারপর ডান দিকে দু’এক কদম সরে গিয়ে আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর কবরের সামনে দাঁড়িয়ে এ বলে সালাম করবেঃ

«السلام عليك يا أبا بكر خليفة رسول الله صلى الله عليه وسلم ورحمة الله وبركاته رضي الله عنك وجزاك عن أمة محمد خيرا»

তারপর আরও দু এক কদম সরে গিয়ে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর সামনে দাঁড়িয়ে এরূপ সালাম করবেঃ

«السلام عليك يا عمر أمير المؤمنين ورحمة الله وبركاته ورضي الله عنك وجزاك الله عن أمة محمد خيرا»

  1. পবিত্র অবস্থায় ওজুসহ মসজিদে কুবায় যাবে এবং সালাত আদায় করবে।
  2. বাকী কবরস্থানে গিয়ে উছমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর কবরের সামনে দাঁড়িয়ে এ বলে সালাম করবেঃ

«السلام عليك يا عثمان أمير المؤمنين ورحمة الله وبركاته رضي الله عنك وجزاك عن أمة محمد خيرا»

বাকী কবরস্থানে অন্যান্য মুসলিম কবরবাসীদেরও সালাম করবে।

  1. ওহুদে হামযাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং তাঁর সাথে যে সমস্ত শহীদান রয়েছেন তাঁদেরকে সালাম করবে। তাঁদের জন্য মাগফিরাত কামনা, আল্লাহর দয়া ও সন্তুষ্টির জন্য দো‘আ করবে।

আল্লাহ তৌফিকদাতা

وصلى الله وسلم على نبينا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين-