হজ্জ ও উমরার হুকুম

নিজের হজ্জ করার আগে অন্যের বদলি হজ্জ করা যাবে কি না?
   

আলহামদুলিল্লাহ।

কোন মুসলিম যদি অন্যের পক্ষ থেকে বদলি হজ্জ করতে চায় তাহলে আগে তাকে নিজের হজ্জ করতে হবে। দলিল হচ্ছে ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর হাদিস, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক লোককে শুবরুমার পক্ষ থেকে তালবিয়া পড়তে শুনে বললেন: শুবরুমা কে? লোকটি বলল: আমার এক ভাই কিংবা আমার এক আত্মীয়। তিনি বললেন: তুমি কি নিজের হজ্জ করেছ? লোকটি বলল: না। তিনি বললেন: “আগে নিজের হজ্জ কর। এরপর শুবরুমার পক্ষ থেকে হজ্জ করতে পারবে।”[সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: মানাসিক, পরিচ্ছেদ: যে ব্যক্তি অন্যের বদলি হজ্জ করেন; এটি একটি সহিহ হাদিস]

 

কোন নারীর যদি উমরা সমাপ্ত করার আগে তার হায়েয শুরু হয় তখন তার করনীয়?

   

আলহামদুলিল্লাহ।

হায়েযের কারণে হজ্জ বা উমরার ইহরাম বাঁধতে কোন বাধা নেই। কিন্তু, হায়েযগ্রস্ত নারীর জন্যে পবিত্র হওয়ার আগে বায়তুল্লাহকে তাওয়াফ করা হারাম। কেননা আয়েশা (রাঃ) যখন মক্কাতে প্রবেশ করার আগে হায়েযগ্রস্ত হয়েছেন তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছেন: “একজন হাজী যা যা করে তুমিও তা তা কর। তবে, তুমি পবিত্র হওয়ার আগে তাওয়াফ করবে না।”[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম]

সহিহ বুখারীতে আরও সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি যখন পবিত্র হয়েছেন তখন বায়তুল্লাহ্‌কে তাওয়াফ করেছেন এবং সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ বা প্রদক্ষিণ করেছেন। এর থেকে জানা গেল যে, কোন নারী তাওয়াফ করার আগে হায়েযগ্রস্ত হলে তিনি পবিত্র হওয়ার আগে তাওয়াফ ও সাঈ করবেন না।

 

উপরুক্ত আলোচনার ভিত্তিতে একটি প্রশ্নোত্তরঃ

আমি ও আমার স্ত্রী দুই দিন আগে উমরা করতে মক্কায় গিয়েছিলাম। বিমানেই আমরা উমরার ইহরাম বেঁধেছি। আমরা যখন মক্কাতে পৌঁছে ব্যাগ-ব্যাগেজ রাখার জন্য হোটেলে  গেলাম। সেখানে যাওয়ার পর আমার স্ত্রী জানতে পারল যে, আমরা যখন হোটেলে পৌঁছেছি তখন তার মাসিক শুরু হয়েছে। এমতাবস্থার হুকুম কী? তার উপর কি কোন ফিদিয়া ওয়াজিব হবে? ফিদিয়ার পরিমাণ কতটুকু?

উপরুক্ত আলোচনার ভিত্তিতে আপনার স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে- পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা, এরপর তিনি বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ করবেন এবং সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ করবেন। এরপর চুল কাটবেন। এর মাধ্যমে তিনি তার উমরার কর্ম সমাপ্ত করলেন। ইহরাম অবস্থায় তার হায়েয হওয়ার কারণে তাকে কোন ফিদিয়া দিতে হবে না।

 

অবিলম্বে হজ্জ আদায়:

   

আলহামদুলিল্লাহ।

যে ব্যক্তি হজ্জ আদায়ের সামর্থ্য রাখেন এবং হজ্জ ফরয হওয়ার শর্তগুলোও তার মধ্যে পূর্ণ হয়েছে তার উপর অবিলম্বে হজ্জ আদায় করা ফরয; বিলম্ব করা নাজায়েয।

ইবনে কুদামা তাঁর ‘মুগনী’ গ্রন্থে বলেন:

যার উপর হজ্জ ফরয হয়েছে ও তার পক্ষে হজ্জ আদায় করা সম্ভবপর তার উপর অবিলম্বে হজ্জ আদায় করা ফরয; বিলম্ব করা নাজায়েয। এটি ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মালেকের অভিমত। দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী- “মানুষের মধ্যে যারা বায়তুল্লাতে পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ্জ আদায় করা ফরজ। কেউ এটা অস্বীকার করলে আল্লাহ তো বিশ্ব জগত থেকে অমুখাপেক্ষী।”[সূরা আলে ইমরান, আয়াত:৯৭] যে কোন আমর বা নির্দেশ অবিলম্বে পালনীয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করতে চায় সে যেন দেরী না করে।”[মুসনাদে ইমাম আহমাদ, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ ও সুনানে ইবনে মাজার এক বর্ণনাতে আছে- “হতে পারে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে, বাহন হারিয়ে যাবে, কোন প্রয়োজন দেখা দিবে” আলবানী ‘সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে হাসান আখ্যায়িত করেছেন। পরিমার্জিত ও সমাপ্ত

যে কোন নির্দেশ অবিলম্বে পালনীয় এর মানে হচ্ছে- মুকাল্লাফ (ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি) কোন নির্দেশ পালন করার সামর্থ্য অর্জন করার সাথে সাথে নির্দেশটি করে ফেলা ফরয। কোন ওজর ছাড়া সে নির্দেশ পালনে দেরী করা নাজায়েয।

শাইখ উছাইমীনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: হজ্জ পালন কি অবিলম্বে ফরয; নাকি বিলম্বে?

জবাবে তিনি বলেন: বিশুদ্ধ মতানুযায়ী হজ্জ অবিলম্বে ফরয। সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য বায়তুল্লাহর হজ্জ পালনে বিলম্ব করা নাজায়েয। অনুরূপ বিধান শরিয়তের সকল ফরয আমলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদি কোন আমল বিশেষ কোন কাল বা কারণের সাথে সম্পৃক্ত না হয় তাহলে সেটা অবিলম্বে আদায় করা ফরয।[সমাপ্ত]

শাইখ উছাইমীনের ফতোয়াসমগ্র (১৩/২১)

 

একাধিকবার হজ্জ করা উত্তম; নাকি একবার হজ্জ করাটাই উত্তম?

   

আলহামদুলিল্লাহ।

ফরজ হওয়ার দিক থেকে হজ্জ জীবনে একবার করাই ফরজ। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার খোতবা দিলেন এবং বললেন: হে লোকসকল, আল্লাহ তোমাদের উপর হজ্জ ফরজ করেছেন; অতএব তোমরা হজ্জ আদায় কর। এক ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল, প্রতি বছর? তিনি চুপ করে থাকলেন। এমনকি সে লোক কথাটি তিনবার উচ্চারণ করল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: আমি যদি হ্যাঁ বলি তাহলে ফরজ হয়ে যাবে; কিন্তু তোমরা তা আদায়ে সক্ষম হবে না। এরপর বললেন: আমি যদি কোন বিষয় এড়িয়ে যাই তোমরা সে বিষয়ে প্রশ্ন করো না। তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতেরা তাদের অধিক প্রশ্নের কারণে এবং নবীদের সাথে মতভেদ করার কারণে ধ্বংস হয়েছে। আমি যখন তোমাদেরকে কোন নির্দেশ প্রদান করি তখন যতদূর সম্ভব সেটা বাস্তবায়ন কর; আর যা কিছু থেকে তোমাদেরকে বারণ করি সেটা থেকে বিরত থাক।[সহিহ মুসলিম (১৩৩৭)]

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, আকরা বিন হাবেস (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ, হজ্জ কি প্রতিবছর; নাকি একবার মাত্র? তিনি বললেন: একবার মাত্র। যে ব্যক্তি একাধিকবার করবে সেটা নফল।”[সুনানে আবু দাউদ (১৭২১) আলবানি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

আর উত্তমতার প্রশ্নে মুসলমান যতবেশি হজ্জ করতে পারে সেটা উত্তম। এমনকি কেউ যদি প্রতিবছর হজ্জ করতে পারে সেটাও ভাল। বেশি বেশি হজ্জ আদায় করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। যেমন-

১. আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল: কোন আমল উত্তম। তিনি বললেন: আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান। জিজ্ঞেস করা হল: এরপর কোনটি? তিনি বললেন: আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। জিজ্ঞেস করা হল: এরপর কোনটি? তিনি বললেন: হজ্জে মাবরুর।”[সহিহ বুখারি (২৬) ও সহিহ মুসলিম (৮৩)]

২. আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি: “যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করল; কিন্তু কোন যৌনাচার কিংবা গুনাহ করল না সে ঐ অবস্থায় ফিরে আসবে যে অবস্থায় তার মা তাকে প্রসব করেছে।”[সহিহ বুখারি (১৪৪৯) ও সহিহ মুসলিম (১৩৫০)]

৩. আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমরা একের পর এক হজ্জ ও উমরা করতে থাক। কেননা এ দুইটি দরিদ্রতা ও গুনাহ দূর করে; যেভাবে কামারের হাফর লোহা ও স্বর্ণরৌপ্যের খাদ দূর করে। হজ্জে মাবরুরের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়।[সুনানে তিরমিযি (৮১০), সুনানে নাসাঈ (২৬৩১), আলবানি সিলসিলা সহিহা গ্রন্থে (`) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।

 

রমজান মাসে উমরাহ

   

রমজানের শেষ দশদিনে কি উমরা করা মুস্তাহাব?

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরজন্য।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান মাসে উমরা পালন করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ইমাম বুখারি (১৭৮২) ও মুসলিম (১২৫৬) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “রমজান মাসে একটি উমরা পালন- হজ্জের সমতুল্য।”

এ হাদিসের বিধান গোটা রমজানকেই শামিল করে; শুধু শেষ দশদিনকে নয়।

 

হজ্বের ফযিলত:

 

আলহামদুলিল্লাহ্।

সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদিস থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি হজ্ব আদায় করেন; কিন্তু কোন পাপের কথা বা কাজ করেননি সে ব্যক্তি ঐদিনের মত হয়ে ফিরে আসবে যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল”।[সহিহ বুখারি (১৫২১) ও সহিহ মুসলিম (১৩৫০)] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন: “এক উমরা আরেক উমরা মাঝের গুনাহ মোছনকারী। আর মাবরুর হজ্বের প্রতিদান হচ্ছে- জান্নাত”।[সহিহ বুখারি (১৭৭৩) ও সহিহ মুসলিম (১৩৪৯)] সুতরাং হজ্ব ও হজ্ব ছাড়া অন্য নেক আমল গুনাহ মাফের কারণ; যদি বান্দাহ সে আমলগুলোকে যথাযথভাবে আদায় করে। অধিকাংশ আলেমের মতে, নেক আমলের মাধ্যমে শুধু সগিরা গুনাহ মাফ পাওয়া যায়; কবিরা গুনাহ নয়। কবিরা গুনাহ মাফ পেতে হলে তওবা করতে হবে। এর সপক্ষে তাঁরা দলিল দেন যে, সহিহ মুসলিমে আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন: “যদি বান্দাহ কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে তাহলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে অন্য জুমা, এক রমজান থেকে অন্য রমজান মধ্যবর্তী গুনাহগুলোকে মার্জনা করিয়ে দেয়।”[সহিহ মুসলিম (১/২০৯)] ইবনুল মুনযিরসহ একদল আলেমের মতে, হজ্বে মাবরুরের মাধ্যমে সকল গুনাহ মাফ হবে।

 

হজ্ব কখন ফরজ হয়েছে:

   

আলহামদুলিল্লাহ।

হজ্ব কোন সালে ফরজ হয়েছে এ ব্যাপারে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। কারো কারো মতে, পঞ্চম হিজরীতে। কারো কারো মতে, ষষ্ঠ হিজরীতে, কারো কারো মতে দশম হিজরীতে। অপেক্ষাকৃত শুদ্ধ অভিমত হচ্ছে- শেষের দুইটি অভিমত। অর্থাৎ হিজরী নবম সালে অথবা দশম সালে হজ্ব ফরজ হয়েছে। দলিল হচ্ছে- আল্লাহ তাআলার বাণী:

وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا

(অর্থ- আরএঘরেরহজ্বকরাহলোমানুষেরউপরআল্লাহরপ্রাপ্য; যেলোকেরসামর্থ রয়েছেএপর্যন্তপৌছার।) এ আয়াতের ভিত্তিতে হজ্ব ফরজ হয়। এই আয়াতে কারীমা আমুল ওফুদ (প্রতিনিধিদল আগমনের বছর) তথা নবম হিজরীর শেষ দিকে নাযিল হয়েছে। অতএব, নবম হিজরীর শেষ দিকে হজ্ব ফরজ হয়েছে। দেখুন যাদুল মাআদ (৩/৫৯৫)।

 

হজ্বের পরিচয়:

 

আলহামদুলিল্লাহ।

নুসুক পালনের উদ্দেশ্য কাবা শরিফ তথা বায়তুল্লায়ে হারাম গমন করাকে হজ্ব বলা হয়। নুসুক হচ্ছে- এমন কিছু কথা ও কাজ যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হজ্বের বিবরণে এসেছে। যেমন- বায়তুল্লাহর চারদিকে সাত চক্কর তওয়াফ (প্রদক্ষিণ), সাফা ও মারওয়া নামক পাহাড়দ্বয়ের মাঝে প্রদক্ষিণ, আরাফার ময়দানে অবস্থান, মীনার জমরাতগুলোতে কংকর নিক্ষেপ ইত্যাদি। হজ্বের মধ্যে বান্দার জন্য প্রভূত কল্যাণ রয়েছে। যেমন আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দেয়া, গুনাহ মাফ পাওয়া, মুসলমানদের সাথে পরিচিত হওয়া, দ্বীনি হুকুম-আহকামশেখা ইত্যাদি।

 

কোন শরয়ি ওজর ছাড়া বিলম্বে হজ্জ আদায় করা:

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য।

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। যে ব্যক্তি হজ্জ করার শক্তি, সামর্থ্য রাখেন কিন্তু এরপরও ফরজ হজ্জ আদায় করছেন না, বরঞ্চ গড়িমসি করছেন তিনি বড় ধরনের গুনাহ ও নাফরমানিতে লিপ্ত রয়েছেন। তাঁর কর্তব্য হচ্ছে- আল্লাহর কাছে তওবা করা এবং অনতিবিলম্বে হজ্জ আদায় করা। যেহেতু আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন: “এবং সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ্জ আদায় করা ফরয। আর যে ব্যক্তি কুফরী করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী।”[সূরা আলে ইমরান, ৩:৯৭]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:

“ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। এই সাক্ষ্য দেয়া যে, নেই কোন সত্য উপাস্য শুধু আল্লাহ ছাড়া এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল (বার্তাবাহক)। নামায কায়েম করা। যাকাত প্রদান করা। রমজান মাসে রোযা রাখা। বায়তুল্লাহতে হজ্জ আদায় করা।”[মুত্তাফাকুন আলাইহি, সহীহ বুখারী (৮), সহীহ মুসলিম (১৬)]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যখন জিব্রাইল (আঃ) ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছেন তখন তিনি বলেছেন: “আপনি সাক্ষ্য দিবেন যে, নেই কোন সত্য উপাস্য শুধু আল্লাহ ছাড়া এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল (বার্তাবাহক)। নামায কায়েম করবেন। যাকাত প্রদান করবেন। রমজান মাসে রোযা পালন করবেন। বায়তুল্লাতে যাওয়ার সামর্থ্য রাখলে হজ্জ আদায় করবেন।”[এ হাদিসটি ইমাম মুসলিম তাঁর সহীহ গ্রন্থে (৮) ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন]