বাবা-মায়ের সাথে যাওয়া শিশুদের হজের হুকুম কি?
অনেক অভিভাবকই পবিত্র হজ সফরে তাদের ছোট সন্তানদের সাথে নিয়ে যান। তাই এ নিবন্ধে তাদের হজের আহকাম তুলে ধরা হল।
(১) ছোট সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, তাদের হজ শুদ্ধ হবে। কিন্তু তা দ্বারা ইসলামের ফরজ হজ আদায় হবে না। অর্থাৎ, যদি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে হজ করে, তবে সে হজ আদায় হবে। তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর ইসলামের ফরজ হজ আদায় করতে হবে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘জনৈকা মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার এক সন্তানকে দেখিয়ে বললেন- ‘এর জন্য কি হজ আছে?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- ‘হ্যাঁ, এবং তোমার জন্য সওয়াব রয়েছে।’ (মুসলিম-১৩৩৬)
(২) এহরাম বাঁধার সময় বড় হাজীরা যা করেন, ছোটদেরকেও তাই করাতে হবে। সন্তান ছেলে হলে পুরুষদের জন্য যা পরা যাবে না ছোট ছেলের জন্যও তা পরা যাবে না, আর সন্তান মেয়ে হলে মহিলাদের জন্য যা পরা যাবে না তা ছোট মেয়ের জন্যও পরা যাবে না।
(৩) অভিভাবকরা যদি এহরাম অবস্থায় থাকেন তবে ছোটদের পক্ষে এহরাম বাঁধতে পারবেন। চাই সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক।
(৪) ছোট সন্তানের পক্ষে হজের যেসব কাজ করা সম্ভব হবে, তা সন্তানকে করতে হবে। এসব কাজ তার অভিভাবক তার পক্ষে আদায় করতে পারবেন না। যেমন- আরাফাতে অবস্থান করা, মুযদালিফায় রাত্রি যাপন করা ইত্যাদি। আর ছোট সন্তান যেসব কাজ করতে পারবে না, তার অভিভাবক তার পক্ষ হতে সেগুলো করতে পারবে। যেমন: তালবিয়া পাঠ, পাথর নিক্ষেপ ইত্যাদি।
(৫) কিন্তু যে অভিভাবকগণ তাদের সন্তানের পক্ষ হতে পাথর নিক্ষেপ করবেন, তাদেরকে প্রতি জামরাতে প্রথমে নিজের পক্ষ থেকে পাথর নিক্ষেপ করে পরে তাদের সন্তানের পক্ষ থেকে নিক্ষেপ করতে হবে।
(৬) তাওয়াফের সময় যদি সন্তান হাঁটতে সক্ষম হয়, তবে সে নিজে নিজে হেঁটে তাওয়াফ করবে। নইলে তাকে বহন করে বা সাওয়ার করে তাওয়াফ করানো যাবে। এ অবস্থায় বহনকারীর জন্য এহরাম অবস্থা হওয়া শর্ত নয়।
(৭) কোনো ক্রমেই ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে হারাম শরীফের বারান্দায় খেলা-ধুলার জন্য ছেড়ে দেয়া যাবে না। কেননা, এতে অন্যান্য মুসল্লিদের অসুবিধা হয়, যা অভিভাবকের গুনাহের কারণ হতে পারে।
অনুরূপভাবে যে সকল সন্তান নিজেই নিজের পায়খানা-পেশাব থেকে পবিত্র হতে শিখেনি, তাদেরকে তাদের অভিভাবক পবিত্র রাখবেন যাতে করে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা হয়।
সূত্র : islamqa.com