নারীর হজ্জ
 
নারীর হজ্জ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর
   

যে নারী হায়েযগ্রস্ত অবস্থায় মীকাত অতিক্রম করেছেন কিন্তু ইহরাম বাঁধেননি:

“আমি উমরা করতে গিয়েছিলাম। মীকাত অতিক্রমকালে আমি হায়েযগ্রস্ত ছিলাম। তাই ইহরাম বাঁধিনি। পবিত্র হওয়া পর্যন্ত আমি মক্কায় থেকেছি। পবিত্র হওয়ার পর মক্কা থেকে ইহরাম বেঁধেছি। এটা কি জায়েয হয়েছে? এখন আমি কি করব কিংবা আমার উপর কী অপরিহার্য?

   

আলহামদুলিল্লাহ।

শাইখ মুহাম্মদ বিন উছাইমীন (রহঃ) বলেন:

“এ কাজটি জায়েয হয়নি। যে নারী উমরা আদায় করতে চান তার জন্য ইহরাম ছাড়া মীকাত অতিক্রম করা জায়েয নয়। এমনকি সে নারী হায়েযগ্রস্ত (মাসিকগ্রস্ত) হলেও তিনি ইহরাম বাঁধবেন। তাঁর ইহরাম সংঘটিত হবে ও সহিহ হবে। দলিল হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বিদায় হজ্জ আদায়ের উদ্দেশ্যে যুল হুলাইফাতে পৌঁছেন তখন আবু বকর (রাঃ) এর স্ত্রী আসমা বিনতে উমাইস (রাঃ) সন্তান প্রসব করেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে লোক পাঠান যে, তিনি কিভাবে কি করবেন? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আপনি গোসল করুন, একটি কাপড় দিয়ে পট্টি বাঁধুন এবং ইহরাম করুন।”

নিফাসের রক্তস্রাব হায়েযের রক্তস্রাবের মতই। তাই আমরা হায়েযগ্রস্ত নারীকে বলব: আপনি যখন উমরা কিংবা হজ্জ করার উদ্দেশ্য নিয়ে মীকাত অতিক্রম করবেন তখন গোসল করুন, পট্টি বাঁধুন এবং ইহরাম করুন।

কিন্তু, তিনি যখন ইহরাম বেঁধে মক্কায় পৌঁছবেন তখন পবিত্র হওয়ার আগ পর্যন্ত বায়তুল্লাতে যাবেন না এবং তাওয়াফ করবেন না। উমরা পালনকালে আয়েশা (রাঃ) এর যখন হায়েয হল তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন: “একজন হাজী যা যা করে তুমিও তা তা কর। তবে, পবিত্র হওয়ার আগে বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ করবে না।”[এটি সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমের রেওয়ায়েত]

সহিহ বুখারীর অপর এক রেওয়ায়েতে আছে যে, যখন তিনি পবিত্র হলেন তখন বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ করেছেন এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করেছেন। এতে প্রমাণ রয়েছে যে, কোন নারী যদি হায়েয অবস্থায় হজ্জের বা উমরার ইহরাম বাঁধেন অথবা তাওয়াফ করার আগে তার হায়েয শুরু হয় তাহলে তিনি পবিত্র হওয়া ও গোসল করার আগে তাওয়াফ ও সাঈ করবেন না। আর যদি পবিত্র অবস্থাতে তাওয়াফ সম্পন্ন করেন এবং তাওয়াফ শেষ করার পর হায়েয শুরু হয় তাহলে হায়েযগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও তিনি বাকী কাজ চালিয়ে যাবেন: সাঈ করবেন, মাথার চুল কাটবেন এবং উমরা শেষ করবেন। কেননা সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ করার জন্য পবিত্রতা শর্ত নয়।”

 

হজ্জ বা উমরা পালনোত্তর নারীদের চুল কাটার পদ্ধতি?

 

আলহামদুলিল্লাহ।

মাথা মুণ্ডন কিংবা চুল ছোট করা উমরার একটি ওয়াজিব কাজ। নারীদের জন্য মাথা মুণ্ডন করার অনুমতি নেই। তাদের জন্য অনুমোদিত হল চুল ছোট করা। তবে অগ্রগণ্য মতানুযায়ী মাথার সবগুলো চুল ছোট করা আবশ্যক। এটি মালেকি ও হাম্বলি মাযহাবের অভিমত। যদি কারো মাথার চুলগুলো বেণী করা থাকে তাহলে সবগুলো বেণীর মাথা থেকে কাটবে। যদি বেণী করা না থাকে তাহলে সবগুলো চুল একত্রিত করে সবগুলো চুল থেকে কাটবে। মুস্তাহাব হচ্ছে আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ কাটা। এর চেয়ে কমও কাটতে পারেন। যেহেতু চুল কাটার পরিমাণ নির্ধারণমূলক কোন শরয়ি দলিল বর্ণিত হয়নি।

আল-বাযি (রহঃ) ‘আল-মুনতাকা’ গ্রন্থে (৩/২৯) বলেন: পক্ষান্তরে, কোন নারী যখন ইহরাম করার মনস্থ করবেন তখন তিনি তার চুল বেণী করে নিবেন যেন তিনি হালাল হওয়ার জন্য চুল কাটতে পারেন। কী পরিমাণ চুল কাটবেন? ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত: আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ। ইবনে হাবিব ইমাম মালেক থেকে বর্ণনা করেন যে, আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ কিংবা এর চেয়ে একটু বেশি কিংবা এর থেকে একটু কম। ইমাম মালেক বলেন: আমাদের মাযহাবে এর সুনির্দিষ্ট কোন পরিমাণ নেই। যতটুকু কাটে সেটা জায়েয হবে। তবে, মাথার সবগুলো চুল কাটতে; সেটা লম্বা চুল হোক কিংবা খাটো চুল হোক।[সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত]

ইবনে কুদামা (রহঃ) তাঁর মুগনি নামক গ্রন্থে (৩/১৯৬) বলেন:

চুল কাটা কিংবা মুণ্ডন করা সবগুলো চুল থেকে করতে হবে। নারীদেরকেও এভাবে করতে হবে (অর্থাৎ চুল ছোট করার ক্ষেত্রে)। এটিই আমাদের অভিমত। ইমাম মালেকও এটাই বলেছেন।[সমাপ্ত]

তিনি আরও বলেন: যতটুকু কাটুক না কেন জায়েয হবে। ইমাম আহমাদ বলেন: আঙ্গুলের কর পরিমাণ কাটবে। এটি ইবনে উমর (রাঃ), শাফেয়ি, ইসহাক, আবু সাওর এর অভিমত। ইবনে উমর (রাঃ) এর উক্তির কারণে এটাকে মুস্তাহাব হিসেবে ধরা হবে।[সমাপ্ত]

তিনি আরও বলেন (২/২২৬):

নারীরা আঙ্গুলের কর পরিমাণ নিজ মাথার চুল কাটবে। আঙ্গুলের কর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- সর্ব উপরের গিরা থেকে আঙ্গুলের মাথা। নারীদের ক্ষেত্রে বিধান হচ্ছে চুল ছোট করা; মুণ্ডন করা নয়। এ বিষয়ে কোন ইখতিলাফ নেই। ইবনুল মুনযির বলেন: আলেমগণ এর উপর ইজমা করেছেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নারীদের উপরে মাথা মুণ্ডন নেই; তাদের জন্য রয়েছে- চুল ছোট করা।”[সুনানে আবু দাউদ] আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম নারীদেরকে মাথা মুণ্ডন করতে নিষেধ করেছেন।”[সুনানে তিরমিযি] ইমাম আহমাদ বলতেন: “চুলের প্রত্যেক বেণী থেকে এক কর পরিমাণ কর্তন করবে।” এটি ইবনে উমর (রাঃ), শাফেয়ি, ইসহাক, আবু সাওর প্রমুখের অভিমত। আবু দাউদ বলেন, “আমি ইমাম আহমাদকে জিজ্ঞেস করতে শুনেছি: নারীরা কি সম্পূর্ণ মাথার চুল ছোট করবে? তিনি বলেন: হ্যাঁ। মাথার সবগুলো চুলকে সামনের দিকে এনে চুলের আগা থেকে আঙ্গুলের কর পরিমাণ কর্তন করবে।”[সমাপ্ত]

শাইখ বিন উছাইমীন (রাঃ) ‘আল-শারহুল মুমতি’ (৭/৩২৯) গ্রন্থে বলেন: তাঁর কথা: “নারীরা কর পরিমাণ কর্তন করবে”। অর্থাৎ আঙ্গুলের কর পরিমাণ। আঙ্গুলের কর হচ্ছে- আঙ্গুলের গিরা। অর্থাৎ কোন নারীর চুলে যদি বেণী থাকে তাহলে তিনি চুলের বেণী (মুঠ করে) ধরবেন; চুলের বেণী না থাকলে চুলের আগা ধরবেন; ধরে আঙ্গুলের কর পরিমাণ কাটবেন। আঙ্গুলের করের পরিমাণ প্রায় ২ সেঃমিঃ। বর্তমানে নারীদের মধ্যে প্রসিদ্ধ হচ্ছে তারা চুলের আগা আঙ্গুলে পেঁচায়, যেখানে চুলের দুই প্রান্ত মিলিত হয় সে স্থানে কাটাকে ওয়াজিব মনে করে — এটি সঠিক নয়।[সমাপ্ত]

উপরোক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায় যিনি এক গুচ্ছ চুল কেটেছেন তিনি শরিয়তসম্মতভাবে চুল কাটেননি। এখন তার কর্তব্য হচ্ছে, আমরা চুল কাটার যে পদ্ধতি উল্লেখ করেছি সেভাবে চুল কাটা। ইতোমধ্যে তিনি ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ এমন যেসব বিষয়ে লিপ্ত হয়েছেন সেগুলোর জন্য তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না।

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) কে এমন এক মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় যিনি তার উমরা সম্পন্ন করতে পারেননি: আর এ নারী যেসব ইহরাম-নিষিদ্ধ কার্যাবলিতে লিপ্ত হয়েছেন; যেমন ধরুন তার স্বামী তার সাথে সহবাস করেছে। ইহরাম অবস্থায় সহবাস করা কঠিনতর নিষিদ্ধ। এক্ষেত্রে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। কেননা এ নারী অজ্ঞ ছিল। প্রত্যেক ব্যক্তি যিনি অজ্ঞতাবশতঃ কিংবা ভুলক্রমে কিংবা জবরদস্তির শিকার হয়ে ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ এমন কোন কর্মে লিপ্ত হন তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না।[শাইখ ইবনে উছাইমীনের ফতোয়াসমগ্র (২১/৩৫১) থেকে সমাপ্ত]

তাঁকে আরও জিজ্ঞেস করা হয় এমন এক লোক সম্পর্কে যে ব্যক্তি উমরা আদায় করার পর তার মাথার শুধু এক অংশের চুল কেটেছে, এরপর তার পরিবারের কাছে ফিরে আসার পর তার কাছে সুস্পষ্ট হয়েছে যে, তার কাজটি ভুল ছিল; এমতাবস্থায় তার কর্তব্য কী? জবাবে তিনি বলেন: যদি তিনি অজ্ঞতাবশতঃ তা করে থাকেন তাহলে তার কর্তব্য হচ্ছে, এখনি সাধারণ কাপড় খুলে (ইহরামের কাপড় পরিধান করা) এবং পরিপূর্ণভাবে মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করা। তার এ ভুল ক্ষমার্হ। কেননা তিনি জানতেন না। মক্কায় অবস্থান করে মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করা শর্ত নয়। বরং মক্কাতে ও মক্কার বাহিরে এ কাজ করা যায়। আর যদি তিনি কোন আলেমের ফতোয়ার ভিত্তিতে এ আমল করে থাকেন তাহলে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। কেননা আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “তোমরা আলেমগণকে জিজ্ঞেস কর; যদি তোমরা না জান।”[সূরা নাহল, আয়াত: ৪৩] কোন কোন আলেমের অভিমত হচ্ছে- মাথার কোন একটি অংশ থেকে চুল কাটা গোটা মাথার চুল কাটার পর্যায়ভুক্ত।[আল-লিকাউস শাহরি (১০নং) থেকে সমাপ্ত]

নারীদের চুল কাটার পূর্বে পোশাক পরিবর্তন করা আবশ্যক নয়। কেননা নারীর জন্য ইহরাম অবস্থায় সাধারণ পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ নয়। বরং তার জন্য শুধু নেকাব ও মোজা পরা নিষিদ্ধ।

আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

 

হায়েযগ্রস্ত নারী মীকাত থেকে হজ্জের শেষ পর্যন্ত যা করবেন?

 

আলহামদুলিল্লাহ।

যদি কোন নারী হায়েয অবস্থায় মীকাত অতিক্রম করেন এবং তিনি হজ্জ পালনে ইচ্ছুক হন তাহলে তিনি মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধবেন। এরপর তিনি মক্কায় এসে হজ্জের যাবতীয় আমল সম্পাদন করবেন; শুধুমাত্র বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাঈ (প্রদক্ষিণ) করা ব্যতীত। তিনি হায়েয থেকে পবিত্র হয়ে এ আমল দুটো পালন করার জন্য রেখে দিবেন। ইহরাম করার পর তাওয়াফ করার পূর্বে যার হায়েয শুরু হয়েছে তিনিও এভাবে করবেন।

আর যিনি তাওয়াফ করার পর তার হায়েয শুরু হয়েছে তিনি হায়েয অবস্থাতেই সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ে সাঈ করবেন।

স্থায়ী কমিটির আলেমগণকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল:

হায়েযগ্রস্ত নারীর হজ্জ করার হুকুম কী?

জবাবে তাঁরা বলেন:

“হায়েয হজ্জ আদায়ে প্রতিবন্ধক নয়। হায়েয অবস্থায় যে নারী ইহরাম বাঁধেন তিনি হজ্জের সকল আমল সম্পাদন করবেন; শুধু বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ করা ব্যতীত। তাঁর হায়েয শেষ হওয়ার পর ও গোসল করার পর তিনি বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ করবেন। নিফাসগ্রস্ত নারীর হুকুমও একই রকম। যদি হায়েযগ্রস্ত নারী হজ্জের রুকনসমূহ আদায় করেন তাহলে তার হজ্জ সহিহ। ”[ফাতাওয়াল লাজনাহ্‌ আদ্‌দায়িমা লিল বুহুস আল-ইলমিয়্যা ওয়াল ইফতা (১১/১৭২, ১৭৩)

শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীন বলেন:

“যে নারী হজ্জ আদায় করতে চান তার জন্যে ইহরাম না বেঁধে মীকাত অতিক্রম করা জায়েয হবে না; এমন কি সে নারী যদি হায়েযগ্রস্ত হন তবুও। কেননা তিনি হায়েযগ্রস্ত হলেও ইহরাম বাঁধবেন এবং তার ইহরাম বাঁধা শুদ্ধ হবে। দলিল হচ্ছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বিদায় হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে যুল হুলাইফাতে অবস্থান করছিলেন তখন আবু বকর (রাঃ) এর স্ত্রী আসমা বিনতে উমাইস (রাঃ) সন্তান প্রসব করলেন। তখন তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লামের কাছে লোক পাঠালেন: তিনি কি করবেন? তখন তিনি বললেন: আপনি গোসল করে নিন, একটা কাপড় বেঁধে নিন এবং ইহরাম করুন।

নিফাসের রক্ত হায়েযের রক্তের ন্যায়। তাই যে ঋতুবতী নারী উমরা কিংবা হজ্জ পালনের উদ্দেশ্য নিয়ে মীকাত পার হচ্ছে আমরা তাকে বলব: আপনি গোসল করে নিন এবং একটা কাপড় বেঁধে নিন এবং ইহরাম করুন। استثفار শব্দটির অর্থ হচ্ছে- লজ্জাস্থানের উপরে একটা কাপড় বেঁধে নিবে। এরপর হজ্জ কিংবা উমরার ইহরাম করবে। কিন্তু, সে নারী মক্কায় পৌঁছার পর পবিত্র হওয়ার আগে বায়তুল্লাহ্‌তে আসবে না এবং তাওয়াফ করবে না। যেহেতু আয়েশা (রাঃ) যখন উমরা পালনকালে হায়েযগ্রস্ত হলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম তাকে বলেন: “একজন হাজী যা যা করে তুমিও তা তা করবে তবে, পবিত্র হওয়ার আগে বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ করবে না।” এটি সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমের বর্ণনা। সহিহ বুখারীর অপর বর্ণনাতে আছে আয়েশা (রাঃ) বলেছেন: “তিনি যখন পবিত্র হয়েছেন তখন তিনি বায়তুল্লাহ্‌ তাওয়াফ করেছেন ও সাফা-মারওয়া সাঈ করেছেন”। এতে প্রমাণিত হয় যে, কোন নারী যদি হায়েয অবস্থায় ইহরাম বাঁধেন কিংবা তাওয়াফ করার আগে তার মাসিক শুরু হয় তাহলে তিনি পবিত্র হওয়া ও গোসল করার আগে তাওয়াফ করবেন না এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ (প্রদক্ষিণ) করবেন না। আর তিনি যদি পবিত্র অবস্থায় তাওয়াফ করে থাকেন, কিন্তু তাওয়াফ শেষ করার পর তার মাসিক শুরু হয় সেক্ষেত্রে তিনি উমরার আমল চালিয়ে যাবেন এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করবেন; এমন কি হায়েয অবস্থা সত্ত্বেও। তিনি মাথার চুল ছোট করে উমরার কাজ সমাপ্ত করবেন। কেননা সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ে সাঈ করার ক্ষেত্রে পবিত্রতা শর্ত নয়।

[সিত্তুনা সুআলান ফিল হায়যি (সুআল: 54)]

আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

   

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব