কুরআনে বর্ণিত দোয়া
 

কুরআনে বর্ণিত দোয়া

   

[ ১ ] رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও এবং আখিরাতেও কল্যাণ দাও। আর আগুনের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও।১

   

[২] رَبَّنَا لا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِيْنَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْراً كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلا تُحَمِّلْنَا مَا لا طَاقَةَ لَنَا بِهৃ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنْتَ مَوْلانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

অর্থঃ হে আমাদের রব! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করো না।

হে আমাদের রব! পূর্ববর্তীদের উপর যে গুরুদায়িত্ব তুমি অর্পণ করেছিলে সে রকম কোন কঠিন কাজ আমাদেরকে দিও না।

হে আমাদের রব! যে কাজ বহনের ক্ষমতা আমাদের নেই এমন কাজের ভারও তুমি আমাদের দিও না। তুমি আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের ক্ষমা কর। আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি আমাদের মাওলা। অতএব কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর।[৬]

   

[৩] رَبَّنَا لا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ

অর্থঃ হে আমাদের রব! যেহেতু তুমি আমাদেরকে হেদায়াত করেছ, কাজেই এরপর থেকে তুমি আমাদের অন্তরকে বক্র করিও না। তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দাও। তুমিতো মহাদাতা।[৭]

   

[৪] رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ

অর্থঃ হে আমার পরওয়ারদেগার! তোমার কাছ থেকে আমাকে তুমি উত্তম সন্তান-সন্ততি দান কর। নিশ্চয়ই তুমিতো মানুষের ডাক শোনো।[৮]

   

[৫] رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

অর্থঃ হে আমাদের রব! আমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দাও। যেসব কাজে আমাদের সীমালঙ্ঘন হয়ে গেছে সেগুলোও তুমি ক্ষমা কর। আর (সৎপথে) তুমি আমাদের কদমকে অটল রেখো এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর।[৯]

   

[৬] رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدْتَنَا عَلٰى رُسُلِكَ وَلاَ تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّكَ لاَ تُخْلِفُ الْمِيعَادَ

অর্থঃ হে রব! নবী-রাসূলদের মাধ্যমে তুমি যে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছো তা তুমি আমাদেরকে দিয়ে দিও। আর কিয়ামতের দিন আমাদেরকে তুমি অপমানিত করিও না। তুমিতো ওয়াদার বরখেলাফ কর না।[১০]

   

[৭] رَبَّنَا آمَنَّا بِمَا أَنْزَلْتَ وَاتَّبَعْنَا الرَّسُولَ فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ

অর্থঃ হে আমাদের রব! তুমি যা কিছু নাযিল করেছো, তার উপর আমরা ঈমান এনেছি। আমরা রাসূলের কথাও মেনে নিয়েছি। কাজেই সত্য স্বীকারকারীদের দলে আমাদের নাম লিখিয়ে দাও।[১১]

   

[৮] رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ

অর্থঃ হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের উপর যুলম করেছি। এখন তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না কর, আর আমাদের প্রতি রহম না কর তাহলে নিশ্চিতই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।[১২]

   

[৯] رَبَّنَا لا تَجْعَلْنَا مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ

অর্থঃ হে রব! আমাদেরকে জালিম সম্প্রদায়ের সাথী করিও না।[১৩]

   

[১০] رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلاةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاূءِ

অর্থঃ হে আমার মালিক! আমাকে সালাত কায়েমকারী বানাও এবং আমার ছেলে-মেয়েদেরকেও নামাযী বানিয়ে দাও। হে আমার মালিক! আমার দোয়া তুমি কবুল কর।[১৪]

   

[১১] رَبَّنَا اغْفِرْلِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ

অর্থঃ হে আমাদের পরওয়ারদেগার! যেদিন চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশ হবে সেদিন তুমি আমাকে, আমার মাতা-পিতাকে এবং সকল ঈমানদারদেরকে তুমি ক্ষমা করে দিও।[১৫]

   

[১২] رَبَّنَا آتِنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَداً

অর্থঃ হে আমাদের রব! তোমার অপার অসীম করুণা থেকে আমাদেরকে রহমত দাও। আমাদের কাজগুলোকে সঠিক ও সহজ করে দাও।[১৬]

   

[১৩] قَالَ رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي – وَيَسِّرْ لِيْ أَمْرِي -وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِنْ لِسَانِيْ – يَفْقَهُوا قَوْلِيْ

অর্থঃ হে আমার রব! আমার বক্ষকে তুমি প্রশস্ত করে দাও। আমার কাজগুলো সহজ করে দাও। জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও, যাতে লোকেরা আমার কথা সহজেই বুঝতে পারে। [১৭]

   

[১৪] رَبِّ زِدْنِي عِلْماً

অর্থঃ হে রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও।[১৮]

   

[১৫] رَبِّ لاَ تَذَرْنِيْ فَرْداً وَأَنْتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ

অর্থঃ  হে রব! আমাকে তুমি নিঃসন্তান অবস্থায় রেখো না। তুমিতো সর্বোত্তম মালিকানার অধিকারী।[১৯]

   

[১৬] رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ – وَأَعُوْذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ

অর্থঃ হে রব! শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি। আমি এ থেকেও তোমার নিকট পানাহ চাই যে, শয়তান যেন আমার ধারে কাছেও ঘেষতে না পারে।[২০]

   

[১৭]  رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَاماً ু إِنَّهَا سَاءَتْ مُسْتَقَرّاً وَّمُقَاماً

অর্থঃ হে আমাদের রব! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচিয়ে দিও। এর আযাব তো বড়ই সর্বনাশা। আশ্রয় ও বাস্থান হিসেবে এটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।[২১]

   

[১৮]  رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَّاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَاماً

অর্থঃ হে আমাদের রব! তুমি আমাদেরকে এমন স্ত্রী-সন্তান দান কর যাদের দর্শনে আমাদের চক্ষুশীতল হয়ে যাবে। তুমি আমাদেরকে পরহেযগার লোকদের ইমাম (অভিভাবক) বানিয়ে দাও।[২২]

   

[১৯] رَبِّ هَبْ لِيْ حُكْماً وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِيْنَ – وَاجْعَلْ لِيْ لِسَانَ صِدْقٍ فِي الآخِرِينَ – وَاجْعَلْنِيْ مِنْ وَرَثَةِ جَنَّةِ النَّعِيمِ – وَلا تُخْزِنِيْ يَوْمَ يُبْعَثُوْنَ

অর্থঃ হে রব! আমাকে জ্ঞান-বুদ্ধি দান কর এবং আমাকে নেককার লোকদের সান্নিধ্যে রেখো।

   

[২০]  ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমার সুখ্যাতি চলমান রেখো।

[২১]  আমাকে তুমি নিয়ামতে ভরা জান্নাতের বাসিন্দা বানিয়ে দিও।

[২২] যেদিন সব মানুষ আবার জীবিত হয়ে উঠবে সেদিন আমাকে তুমি অপমানিত করো না।১৯-২২

   

[২৩]  رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحاً تَرْضَاهُ وَأَدْخِلْنِي بِرَحْمَتِكَ فِي عِبَادِكَ الصَّالِحِينَ

অর্থঃ হে প্রতিপালক! তুমি আমার ও আমার মাতা-পিতার প্রতি যে নিয়ামত দিয়েছো এর শোকরগোজারী করার তাওফীক দাও এবং আমাকে এমন সব নেক আমল করার তাওফীক দাও যা তুমি পছন্দ কর। আর তোমার দয়ায় আমাকে তোমার নেক বান্দাদের মধ্যে শামিল করে দাও।২৩

   

[২৪] رَبِّ انْصُرْنِي عَلَى الْقَوْمِ الْمُفْسِدِينَ

অর্থঃ হে রব! ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তুমি আমাকে সাহায্য কর।২৪

   

[২৫] رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ

অর্থঃ হে রব! আমাকে তুমি নেককার সন্তান দান কর।২৫

   

[২৬]  رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحاً تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي

অর্থঃ হে রব! তুমি আমার ও আমার মাতা-পিতার প্রতি যে নিয়ামত দিয়েছ এর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার তাওফীক দাও এবং আমাকে এমন সব নেক আমল করার তাওফীক দাও যা তুমি পছন্দ কর। আর আমার ছেলে-মেয়ে ও পরবর্তী বংশধরকেও নেককার বানিয়ে দাও।২৬

   

[২৭]  رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالإِيْمَانِ وَلا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلاًّ لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَؤُوفٌ رَحِيْمٌ

অর্থঃ হে আমাদের মালিক! তুমি আমাদের মাফ করে দাও। আমাদের আগে যেসব ভাইয়েরা ঈমান এনেছে, তুমি তাদেরও মাফ করে দাও। আর ঈমানদার লোকদের প্রতি আমাদের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে দিও না। হে রব! তুমিতো বড়ই দয়ালু ও মমতাময়ী।[২৩]

   

[২৮]  رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

অর্থঃ হে আমাদের রব! আমাদের জন্য তুমি আমাদের নূরকে পরিপূর্ণ করে দাও। তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর। তুমি তো সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।[২৪]

   

[২৯]  رَبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَنْ دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِناً وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ

অর্থঃ হে আমার রব! আমাকে, আমার মাতা-পিতাকে, যারা মুমিন অবস্থায় আমার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তাদেরকে এবং সকল মুমিন পুরুষ-নারীকে তুমি ক্ষমা করে দাও।[২৫]

   

[৩০] رَبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِياً يُنَادِي لِلإِيْمَانِ أَنْ آمِنُوا بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الأَبْرَارِ

অর্থঃ হে আমার রব! নিশ্চয়ই আমরা এক আহ্বানকারীকে আহ্বান করতে শুনেছিলাম যে, তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তাতেই আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, হে আমাদের প্রতিপালক! অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা কর ও আমাদের পাপরাশি মোচন কর এবং পুণ্যবানদের সাথে আমাদেরকে মৃত্যু দান কর।[২৬]


[১] আল-বাদায়ে’ আস-সানায়ে’ [২] (সূরা আলে ইমরান : ৯৭) [৩] (বুখারী ১৫২৬, মুসলিম ১১৮১) [৪] (সূরা বাকারা ২০১)[৫](বাকারা : ১২৫১ সূরা আল-বাকারা ২ : ২০১। [৬] সূরা আল-বাকারা ২ : ২৮৬।[৭] সূরা আলে-ইমরান ৩ : ৮। [৮] সূরা আলে-ইমরান ৩ : ৩৮। [৯] সূরা আলে-ইমরাহ ৩ : ১৪৭। [১০] সূরা আলে-ইমরান ৩ : ১৯৪। [১১] সূরা আল-মায়িদা ৫ : ১৮৩। [১২] সূরা আল-আ’রাফ ৭ : ২৩। [১৩] সূরা আল-আ’রাফ ৭ : ৪৭। [১৪] সূরা ইবরাহীম ১৪ : ৪০। [১৫] সূরা ইবরাহীম ১৪ : ৪১। [১৬] সূরা কাহ্‌ফ ১৮ : ১০। [১৭] সূরা হূদ ২০ : ২৫। [১৮] সূরা হূদ ২০ : ১১৪। [১৯] সূরা আম্বিয়া ২১ : ৮৯। [২০] সূরা মু’মিনূন ২৩ : ৯৭-৯৮। [২১] সূরা আল-ফুরক্বান ২৫ : ৬৫-৬৬। [২২] সূরা আল-ফুরক্বান ২৫ : ৭৪। ১৯-২২ সূরা আশ-শু’আরা ২৬ : ৮৩,৮৪,৮৫‌,৮। [২৩] সূরা আন-নাম্‌ল ২৭ : ১৯। [২৪] সূরা ‘আনকাবূত ২৯ : ৩০। [২৫] সূরা আস-সাফ্‌ফাত ৩৭ : ১০০। [২৬] সূরা আহকাফ ৪৬ : ১৫। [২৭] সূরা হাশর ৫৯ : ১০। [২৮] সূরা তাহরীম ৬৬ : ৮। [২৯] সূরা নূহ ৭১ : ২৮। [৩০] সূরা আলে ইমরান ৩ : ১৯৩

    তথ্য সূত্রঃ Preaching Authentic Islam In Bangla.   হজ্জ ও উমরাহ্‌ সম্পর্কিত আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ  https://haramainbd.com/blog/