কংকর নিক্ষেপ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর?
১০ই যিলহজ্জ অর্থাৎ ঈদের দিনে কাজ সমূহ?
নিম্নবর্ণিত ৪টি কাজ :
কংকর নিক্ষেপ [শুধুমাত্র বড় জামারায়],
কুরবানী করা,
চুল কাটা
আজকের ঈদের দিনে কোন কাজটি প্রথমে করব?
“বড় জামারা” কোন্টি?
কংকর নিক্ষেপের হেকমত কি?
জামারায় কংকর মারার হুকুম কি?
১১ এবং ১২ যিলহজ্জ তারিখে প্রতিটি “জামারায়” প্রতিবারে কয়টি কংকর মারতে হয়?
প্রথমদিন অর্থাৎ ১০ই যিলহজ্জ তারিখে ‘বড় জামারায়’ পাথর নিক্ষেপের সময় কখন শুরু হয়?
প্রথমদিন কংকর নিক্ষেপের শেষ সময় কখন?
কংকর নিক্ষেপের শর্ত কয়টি ও কি কি?
শর্তগুলো নিম্নরূপ :
জামারার খুঁটিকে লক্ষ্য করে কংকর ছুঁড়ে মারতে হবে। অন্যদিকে টার্গেট করে মারলে খুঁটিতে লাগলেও শুদ্ধ হবে না।
ঢিলটি জোরে নিক্ষেপ করতে হবে। সাধারণভাবে কংকরটি সেখানে শুধু ছুয়ায়ে দিলে হবে না।
কংকরটি পাথর হতে হবে। মাটি বা ইটের টুকরা দিয়ে হবে না।
কংকরটি হাত দিয়ে নিক্ষেপ করতে হবে। ছেলে-মেয়েদের খেলনা, গুলাল, তীর বা পা দিয়ে লাথি মেরে নিক্ষেপ করলে হবে না।
সাতটি পাথর হাতের মুঠোয় ভরে একেবারে নয় বরং একটি একটি কংকর হাতে নিয়ে নিক্ষেপ করতে হবে।
ব্যবহৃত কংকর পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না।
কংকর নিক্ষেপের সুন্নাত তরীকাগুলো কি কি?
এগুলো নিম্নরূপ :
মিনায় প্রবেশ করে কংকর নিক্ষেপের আগে অন্য কিছু না করা।
কংকর নিক্ষেপ শুরু করার পূর্বে তালবিয়াহ পাঠ বন্ধ করে দেয়া।
প্রতিটি কংকর নিক্ষেপের সময় “আল্লাহু আকবার” বলা। ডান হাতে নিক্ষেপ করা। পুরুষের হাত উঁচু করে নিক্ষেপ করা। মেয়েরা হাত উঁচু করবে না।
কংকরের সাইজ হবে গুলালের গুলির কাছাকাছি বা চানা বুটের দানার চেয়ে একটু বড়।
প্রথমদিন সূর্যোদয়ের পরে মারা সুন্নাত।
দাঁড়ানোর সুন্নত হলো মক্কাকে বামপাশে এবং মিনাকে ডানে রেখে ‘জামারার’ দিকে মুখ করে দাঁড়াবে। এরপর নিক্ষেপ করবে। প্রচণ্ড ভীড় হলে যে
কোন দিকে দাঁড়িয়েও মারতে পারেন।
একটা কংকর মারার পর আরেকটি মারা। অর্থাৎ দুই কংকরের মধ্যে বেশী সময় না নেয়া।
আইয়্যামে তাশরীকের দিনগুলোতে পাথর নিক্ষেপের হুকুম কি?
উপরে বর্ণিত ৩ দিনে কংকর নিক্ষেপ কখন শুরু করব?
এ ৩ দিনে পাথর নিক্ষেপের শেষ সময় কখন?
১২ই যিলহজ্জ কংকর নিক্ষেপ করে যদি সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করতে না পারে তাহলে এর বিধান কি?
যারা ১২ তারিখে সন্ধ্যার পূর্বে মিনা ত্যাগ করতে পারেনি তারা কি ১৩ তারিখে দুপুরের আগে পাথর মারতে পারবে?
প্রথমে ছোট, এরপর মধ্যম এবং সর্বশেষে বড় জামারায় কংকর নিক্ষেপে তারতীব অর্থাৎ সিরিয়াল ঠিক রাখার বিধান কি?
আইয়্যামে তাশরীকের (অর্থাৎ ১১, ১২ ও ১৩ই যিলহজ্জ তারিখে) কংকর নিক্ষেপের সুন্নাত তরীকাগুলো কী কী?
তরীকাগুলো নিম্নরূপ :
দুপুর হলে পরে কংকর নিক্ষেপ আগে, এরপর যুহরের সালাত আদায় এভাবে সিরিয়াল করা মুস্তাহাব। (বুখারী) প্রচণ্ড ভীড় থাকে বিধায় এ সিরিয়াল ঠিক রাখার
চেষ্টা না করাই ভাল।
মিনার মসজিদে ‘খায়েফ’ থেকে কাবার দিকে অগ্রসর হলে প্রথমে ছোট এরপর মধ্যম এবং শেষে বড় জামরা দেখতে পাবেন। আগে ছোট ‘জামারায়’
কংকর নিক্ষেপ করে এটাকে বামে রেখে এখান থেকে একটু এগিয়ে গিয়ে কিবলামুখী হয় দাঁড়িয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়বেন এবং
দু’হাত উঠিয়ে দোয়া করবেন।
এরপর যাবেন মধ্যম ‘জামারায়’। এখানেও পূর্বের মত ‘আল্লাহু আকবার’ বলে প্রতিটি কংকর নিক্ষেপ করবেন এবং পরে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ আল্লাহু আকবার, লা ইলাহাইল্লাল্লাহ,
পড়বেন এবং কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে আরবীতে বাংলায় যত পারেন লম্বা মুনাজাত করবেন। একাকি মুনাজাত করাই সুন্নাত।
কংকরটি হাউজের মধ্যে পড়ল কিনা যদি এমন সন্দেহ হয় তাহলে কী করতে হবে?
যদি এক বা একাধিক কংকর কম নিক্ষেপ করে থাকে তবে তার বিধান কী?
কোন্ ধরনের হাজীদের পক্ষে বদলী পাথর নিক্ষেপ জায়েয আছে?
কোন্ কোন্ শর্তে বদলী কংকর নিক্ষেপ জায়েয হবে?
যিনি বদলী মারবেন তিনি একই বছরের হাজী হতে হবে।
(২) যার পরিবর্তে বদলী মারবেন তিনি অবশ্যই অক্ষম ব্যক্তি হতে হবে।
(৩) প্রথমে হাজী নিজের পাথর মারবেন, এরপর অক্ষম ব্যক্তির কংকর মারবেন।
জামারাগুলোকে’ শয়তান অর্থে ব্যবহারের একটা প্রচলন আছে। অর্থাৎ বড় শয়তান, মধ্যম শয়তান ও ছোট শয়তান বলা হয়, এরূপ নামকরণ কি ঠিক আছে?
কংকর নিক্ষেপকালে কি কি ত্রুটি হাজীগণ সচরাচর করে থাকেন?
নিম্নবর্ণিত ভুল ত্রুটি লক্ষ্য করা যায় :
১১, ১২ ও ১৩ই যিলহজ্জ দুপুরের আগেই কংকর নিক্ষেপ করে থাকে। এ কাজটা ভুল। সময় শুরু হয় দুপুরের পর থেকে।
মুযদালিফা থেকেই কংকর কুড়াতে হবে, এ ধারণা ভুল।
কেউ কেউ কংকর ধৌত করে থাকে। এ কাজ ঠিক না।
ধাক্কাধাক্কি করে অন্য হাজীদেরকে কষ্ট দিয়ে কংকর নিক্ষেপ করে থাকে। এরূপ করা অন্যায়।
তথ্য সূত্রঃ Preaching Authentic Islam In Bangla.